দিল্লি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জি এন সাইবাবা, সাংস্কৃতিক কর্মী হেম মিশ্রা সমেত সাতজন জেল থেকে বাইজ্জত রিহা হলেন, নির্দোষ হিসেবে বেরিয়ে এলেন। কিন্তু মধ্যে কেটে গেল ১০টা বছর। বড্ড তেএঁটে কিছু মানুষ, যাদের একজনকেও দুর্নীতির সঙ্গে জড়ানো যাবেই না, মানে ধরুন ভারাভারা রাও, কি গৌতম নওলাখা বা অরুন্ধতী রায় বা সোমা সেন, উমর খালিদ এঁদের দুর্নীতি ৩০০ হাত মাটি খুঁড়েও মিলবে না। অতএব এনারা দেশদ্রোহী, নকশাল, আর্বান নকশাল, টুকরে টুকরে গ্যাং ইত্যাদি বলে এঁদেরকে জেলে ঢোকাও। কেবল জেলে ঢোকালেই তো হবে না, সাংঘাতিক মামলা দাও।
আরও পড়ুন: কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট (পর্ব-১৬)
ধরুন ওই অশীতিপর জেসুইট ফাদার স্ট্যান স্বামী, গৌতম নওলাখা, জি এন সাইবাবা, সোমা সেন, সুরেন্দ্র গ্যাডলিং বা ভারাভারা রাওয়ের উপর অভিযোগটা কী? ওঁরা নাকি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন। যে প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষার জন্য প্রতিদিন ১ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়, তাঁকে মারার জন্য জেলে পাঠানো হল কাদের? তাঁরা কবি, অধ্যাপক, উকিল, সমাজকর্মী, সাংবাদিক। একজন মানুষকে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্রের দায়ে ১০ বছর জেলে রাখা হল যে মানুষটি ৯৯ শতাংশ প্রতিবন্ধী, হুইল চেয়ার ছাড়া এক পাও হাঁটতে পারেন না। তিনি জেলে রইলেন ১০ বছর, তারপরে জানা গেল তিনি নির্দোষ। এই বিরাট সময়ের মধ্যে তিনি বারবার বলেছেন তিনি ফিরে যেতে চান ক্লাসরুমে। কে কার কথা শোনে। এই বিচার চলাকালীন এক অবজার্ভেশনে এক বিচারক বলেছিলেন অস্ত্রশস্ত্র নয়, হাত পাও নয়, মানুষের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হল মগজ, এই অভিযুক্ত সেটাই ব্যবহার করেছিলেন এবং এক বিরাট ষড়যন্ত্রের অংশীদার, তাই এই বিচারের সময় আমাদের ওই ৯৯ শতাংশ প্রতিবন্ধকতার কথা মাথায় না রাখলেও চলবে। আমরা তো জানি মি লর্ড। ওই বিরোধী আর প্রতিবাদী প্রত্যেক মস্তিষ্ককে জেলে পুরে রাখাটাই যে কোনও স্বৈরাচারের প্রথম আর প্রধান লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই গ্রেফতার করা হয়েছে প্রতিবাদীদের, কাউকে হত্যার ষড়যন্ত্রে, কাউকে বানানো দুর্নীতির অভিযোগে, কাউকে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে। আমরা জানি। সেই ষড়যন্ত্রের শিকার আমাদের সম্পাদক, ২৩৫ দিন জেলে, জামিনও নেই। না হুজুর, আমরা জামিন চাইছি না, চাইছি সুবিচার। জাস্টিস ফর কলকাতা টিভি, জাস্টিস ফর কৌস্তুভ রায়।
দেখুন ভিডিও: