পাণ্ডুয়া: পৃথিবীকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাওয়ার অঙ্গীকার পূরণ করে যেতে পারেননি সুকান্ত ভট্টাচার্য। তাই ধুমধাম করে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পালনের সময়ও ক্ষুধার্তের তালিকায় এদেশ এগিয়ে আছে। অপুষ্টিও নবজাতকের জন্মসঙ্গী। এরকম অপুষ্টির শিকার মুমূর্ষু যমজ ভাইবোনকে সুস্থ করে তুলে জাঁকজমক করে তাদের অন্নপ্রাশন করা হল হুগলিতে।
পাণ্ডুয়া ব্লক হাসপাতালে পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে (নিউট্রিশন রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার) গত ২৮ ডিসেম্বর ভর্তি হয়েছিল কৃষ্ণ ও কাবেরী কিস্কু। তারা যমজ ভাইবোন। ধনিয়াখালির বাসিন্দা দিনমজুর কুশ ও রূপবাণী কিস্কুর ছেলে-মেয়ে জন্মের পর থেকেই অপুষ্টিতে ভুগছিল। চিকিৎসককে দেখিয়েও কাজ হয়নি। ৫ মাস বয়স হয়ে গেলেও তাদের ওজন ৩ কেজির বেশি হয়নি। দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন কিস্কু দম্পতি।
অপুষ্ট শিশুদের সরকারিভাবে চিকিৎসার জন্য এনআরসি রয়েছে হুগলির পাণ্ডুয়া ও গোঘাট গ্রামীণ হাসপাতালে। স্বাস্থ্যকর্মীদের মাধ্যমে পাণ্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালের এনআরসিতে ভর্তি করা হয় দুই শিশুকে। মূলত অপুষ্ট শিশুদের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য কাজ করে এনআরসি। ২০ দিন সেখানে থেকেই বেশ চনমনে হয়ে যায় কৃষ্ণ ও কাবেরী।
আরও পড়ুন: INTTUC: তোলাবাজি বন্ধ করতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গ্রেফতার দুই প্রভাবশালী আইএনটিটিইউসি নেতা
চার বছর আগে পথচলা শুরু করেছিল এনআরসি। সেই দিনটিকে স্মরণ রাখতে মঙ্গলবার জন্মদিন পালন করা হয় সেন্টারের। ওইদিনই যমজ ভাইবোনের ছয় মাস পূর্ণ হল। তাই হুগলি জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে তাদের অন্নপ্রাশনের ব্যবস্থা করা হয় এই কেন্দ্রেই। নতুন জামা পরিয়ে পঞ্চব্যঞ্জন দিয়ে মুখেভাত দেওয়া হয় কৃষ্ণ ও কাবেরীর। উপস্থিত ছিলেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। এবার থেকে পুষ্টির জন্য সব কিছুই খাওয়ানো হবে তাদের। এনআরসিতে থাকা অন্য শিশুর জন্যও নিউট্রিশন কিট উপহার দেওয়া হয় এদিন। এছাড়াও যে শিশুরা ভর্তি আছে, তাদের মায়েদের জন্য খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ফ্রায়েড রাইস, চিকেন, চাটনি, মিষ্টিরও আয়োজন ছিল। বেলুন দিয়ে সাজানো হয় পুরো সেন্টারটি। উপস্থিত ছিলেন হুগলির ডেপুটি সিএমওএইচ-৩ সুব্রত সেনশর্মা, পাণ্ডুয়ার বিএমওএইচ মঞ্জুর আলম।
যমজ শিশুদের মা রূপবাণী কিস্কু বলেন, খুব চিন্তায় ছিলাম বাচ্চা দুটোকে নিয়ে। ওদের স্বাস্থ্য খুব খারাপ ছিল। এনআরসিতে দেওয়ার পর ওদের স্বাস্থ্য ফিরেছে। দিদিরা বলে দিয়েছেন কী খাবার দিতে হবে। চেষ্টা করব যাতে ওরা সুস্থ থাকে।