কলকাতা: কলেজ স্ট্রিট (College Street) পাড়ায় কফি হাউজ (Coffee House) বিল্ডিংয়ের পূর্ব দিকের অংশ শ্রীঅরবিন্দ পাঠমন্দির (Sri Aurobindo Pathamandir)। এখন সেই পাঠমন্দিরই চর্চার বিষয়। না, কোনও বিতর্ক নয়। যুব সম্মেলনের বিষয় এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তরুণ-তরুণীদের উৎসাহই চর্চায় এনে দিয়েছে। বিষয়টা বুঝতে কি একটু অসুবিধা হচ্ছে? তাহলে একটু খুলেই বলা যাক।
সোমবার, ১০ সেপ্টেম্বর অরবিন্দ পাঠমন্দিরের যুবদের উদ্যোগে বার্ষিক ইউথ কনফারেন্স (Youth Conference) হয়। সেই কনফারেন্সের সূচনা হয় পাঠমন্দিরের সম্পাদক শঙ্কর দত্তের পাঠ দিয়ে। সেই পাঠে ছিল পন্ডিচেরি থেকে আসা শ্রীমায়ের আর্শিবাদ। তারপর কনফারেন্স এগোয় তার নিজের ছন্দে।
হঠাৎ কেন এই ইউথ কনফারেন্স?
উদ্যোক্তা তমোজিৎ হাজরা, দেবজ্যোতি ঘোষ এবং কৌশিক দত্ত রায় জানিয়েছেন, আমাদের এই কনফারেন্স করার উদ্দেশ্য ছিল জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে নিজেকে ঠিক রেখে জীবনকে সুন্দর ও পজিটিভ ভাবে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, তার একটা পথ যুব সমাজের সামনে তুলে ধরা। কারণ, প্রতিটা ধাপে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় প্রত্যেককে। সে ছাত্র হোক কিংবা চাকরিজীবী। কীভাবে সেই চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবিলা করতে হবে, কীভাবে জীবনের পথে এগিয়ে যেতে হবে তার একটা স্বচ্ছ ধারনা যদি তরুণদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় তারই একটা প্রয়াস।
শুধুই কি বক্তব্য শোনানো হয়েছে?
উদ্যোক্তরা জানিয়েছেন, যাঁরা এসেছিলেন তাঁদের বিভিন্ন প্রশ্নোত্তর, গ্রুপ ডিসকাসন সবই ছিল। এটা কোনও তথাকথিত গ্রুমিং ক্লাস ছিল না। এটা ছিল তরুণদের নিজেদের মেলে ধরার একটা জায়গা। তাই প্রফেশনাল গ্রুমিং ক্লাসের সঙ্গে এই কনফারেন্সকে গুলিয়ে ফেললে ভুল হবে। এখানে যেমন পাঠমন্দিরের ইতিহাস নিয়ে বলা হয়েছে তেমনি ভয় কাটানোর উপায়। ভয়কে মোকাবিলা করার পন্থা। সেই সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক ওয়ার্ল্ডে এগিয়ে যাওয়ার উপায়। এককথায় শ্রীঅরবিন্দ ও শ্রীমায়ের শিক্ষাকে তুলে ধরা।
বছরে কি একবারই এই কনফারেন্স হয়?
উদ্যোক্তাদের কথায়, কনফারেন্স বছরে একবারই করা হয়। তবে প্রতি মঙ্গলবার ‘ইউথ পাঠচক্র’ পাঠমন্দিরে হয়। সেখানেও এই ধরনের আলোচনা হয়। এছাড়া রাজ্যের যেসমস্ত জায়গায় সেন্টার রয়েছে, সেখানেও পাঠচক্র হয়। অর্থাৎ যার যেখানে যাতায়াতে সুবিধা সে সেখানে গিয়ে অংশ নিতে পারে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, শ্রীঅরবিন্দ এবং শ্রীমায়ের শিক্ষাকে আরও ছড়িয়ে দেওয়া। সেই জন্য আমরা সারা বছর বিভিন্ন কার্যক্রম করে থাকি। সেগুলোই আরও বেশি করে করা।
সবমিলিয়ে পাঠমন্দিরের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সমাজের বিশিষ্টরা। বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী অলকানন্দা রায় জানিয়েছেন, এরকম কনফারেন্স আরও হওয়া দরকার। শুধু বসে বসে শোনার জন্য করে লাভ নেই। মেক ইট ইন্টারেস্টিং। শ্রীঅরবিন্দকে বোঝার জন্য ইউথদেরকে ওদের মতো করে বোঝানোটা খুব দরকার। তাই এই উদ্যোগ সত্যি প্রশংসনীয়।