কলকাতা: কোথাও শাসকদলের বিধায়কের হুমকিতে এক ভোটে পরাজিত প্রার্থীকে জয়ী বলে ঘোষণা করা হয়েছে। আবার কোথাও শাসকদলের প্রার্থী মোট ভোটারের থেকেও বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। পঞ্চায়েত ভোটে এরকম একাধিক ভূতুড়ে ঘটনা সামনে আসায় বিস্মিত আদালত। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে আদালত বিডিওকে তলব করেছে। কোনও ঘটনার জন্য আদালত আবার নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Vote) যেমন অজস্র বেনিয়ম হয়েছে, তেমনি গণনার ক্ষেত্রে নানা ভূতুড়ে কাণ্ড ঘটেছে। বুধবারই বিজেপির এক জমায়েতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, অন্তত ২২ হাজার বুথে অনিয়ম হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (West Bengal State Election Commission) কাছে প্রায় ৬ হাজার বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানানো হয়েছিল। যদিও কমিশন মাত্রা ৬৯৬ বুথে পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ দেয়। সেই পর্বও মিটে গিয়েছে। কিন্তু অনিয়মের অভিযোগ এখনও আসছে আদালতে। পঞ্চায়েতকেন্দ্রিক গুচ্ছ গুচ্ছ মামলা আসায় খোদ প্রধান বিচারপতি টি এস শিভগননমই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
হাবড়া -২ নম্বর ব্লকের দিঘড়া-মালিবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে শাসকদলের জয়ী ৩ প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট মোট ভোটারের থেকে বেশি বলে অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে আদালতে মামলা হয়। প্রার্থীদের মোট ভোটারের থেকে বেশি ভোট পাওয়ার ঘটনায় বিস্মিত কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Calcutta High Court Justice Amrita Sinha)। তিনি ৪ অগাস্টের মধ্যে বিডিওকে এব্যাপারে রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ অগাস্ট ।
আরও পুড়ুন: BJP Rally | ২১ জুলাই রাজ্য জুড়ে বিডিও অফিস ঘেরাওয়ের ডাক দিলেন বিজেপির
ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে ৮৩ নং পার্টে মোট ভোটার ১৪৮৮ জন। জয়ী প্রার্থী রোকেয়া বিবি পেয়েছেন ১৫৩০ ভোট। অন্য একটি বুথে মোট ভোটার ১৫৩৯ জন। জয়ী প্রার্থী জেসমিনা খাতুন পেয়েছেন ১৬৩১ ভোট। তৃতীয় বুথে,মোট ভোটার ১৪৮১ জন। জয়ী প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ১৭৮২। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগে মামলা করেন মহম্মদ নূরউদ্দিন সহ কয়েকজন।
এদিকে কুলপির রামকৃষ্ণপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রার্থী অর্পিতা বণিক সর্দার অভিযোগ করেন, তৃণমূল বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার দলবল নিয়ে গণনা কেন্দ্রে ঢুকে বিডিওকে ধমকেছেন। সেই ধমকেই এক ভোটে জয়াী প্রার্থীকে পরাজিত বলে ঘোষণা করা হয়। সেখানে শাসকদলের প্রার্থী জয়ী হন বলে প্রশাসন দাবি করে। এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অর্পিতা। বিচারপতি সিনহা এই মামলায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কৈফিয়ত তলব করেন।