কলকাতা: রাজ্যপালের সরিয়ে দেওয়া উপাচার্যকেই গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের (Vice-Chancellor Gaurbang University) কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। এর ফলে ভোটের মুখে রাজভবন-নবান্ন সংঘাত (Raj Bhavan-Nabanna Conflict) চরমে উঠল। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই উলটপুরাণে রাজভবনের কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে সূত্রের খবর, রাতে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (Governor C. V. Ananda Bose) এ ব্যাপারে কোনও কড়া অবস্থান নিতে পারেন। তিনি এদিন সকালে জলপাইগুড়ি চলে যান ঝঞ্চাবিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করতে।
রবিবার আচার্য তথা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য রজতকিশোর দেকে অপসারণের নির্দেশ দেন। গত বছরের অগাস্ট মাসে রাজ্যপাল রজতকিশোরকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য নিযুক্ত করেন। মাত্র নয় মাসের মাথায় তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল। এতে ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকার। এদিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) বলেন, এই লোকটার (রাজ্যপাল) পাগলামি এবং বোকামি দেখতে দেখতে রাজ্যবাসী ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: ভরা গ্রীষ্মে নির্বাচন, একাধিক পদক্ষেপ কমিশনের
গত শনিবার গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূল প্রভাবিত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপার রাজ্য কনভেনশন হয়। সেই কনভেনশনে তৃণমূলের দুই প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী ওই সংগঠনের সভাপতি। তিনিও হাজির ছিলেন। বিরোধীদের অভিযোগ, এতে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে। বিরোধী দলগুলি নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ করে। কমিশন কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই রাজ্যপাল অস্থায়ী উপাচার্যকে সরিয়ে দিয়েছেন। রাজ্য সরকারের দাবি, কনভেনশন করার কারণেই রজতকিশোরকে সরে যেতে হল। শিক্ষামন্ত্রী এদিন বলেন, ওই কনভেনশনে উপাচার্য হাজিরও ছিলেন না। এই লোকটার পাগলামি এবং বোকামি দেখতে দেখতে রাজ্যবাসী ক্লান্ত। ওঁর গোঁসা হয়েছে। তাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে রাজ্যপাল ওই পদক্ষেপ করেছেন।
সোমবার রাজ্য সরকার পাল্টা নির্দেশ দিয়ে রজতকিশোরকেই কাজ চালিয়ে যেতে বলেছে। এই ঘটনাও নজিরবিহীন। উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র করে নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাত বহুদিন ধরেই চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তাবড় নেতা-মন্ত্রীরা রাজ্যপালকে এই ইস্যুতে বহুবার আক্রমণ করেছেন কড়া কড়া বাক্যবাণ নিক্ষেপ করে। এর আগেও নিজের নিয়োগ করা একাধিক উপাচার্যকে রাজ্যপাল সরিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু রাজ্যপালের নির্দেশের পর রাজ্য সরকারকে পাল্টা পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি। এদিন সেটাই ঘটল। এখন দেখার, এরপর রাজ্যপাল কী পদক্ষেপ করেন।
অন্য খবর দেখুন